আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০১:২৭
পাকিস্তান সফরে ইব্রাহিম রাইসি

কাশ্মীর নিয়ে সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টায় ইরানের নিরবতা

অনলাইন ডেস্ক
কাশ্মীর নিয়ে সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টায় ইরানের নিরবতা

ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি সোমবার ইসলামাবাদ সফরের সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাথে দেখা করেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুই প্রতিবেশী দেশের অর্থনৈতিক, সীমান্ত ও জ্বালানি সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে ইসলামাবাদ সফর করেন রাইসি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে সোমবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী এবং এই সফরের সময় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সমস্যা, জ্বালানি এবং সীমান্ত সমস্যাসহ নানা বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সাথে আলোচনা করা হবে। তবে, তাদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কাশ্মীর ইস্যুতে ইব্রাহিম রাইসির সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিষয়টির সাথে যুক্ত হতে ইরানের রাষ্ট্রপতির অস্বীকৃতি ইরানের সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক আচরণের ইঙ্গিত দেয় কারণ দেশটি ভারতের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অনুসরণ করে চলছে।

এক প্রতিবেদনে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গাজা যুদ্ধকে আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত করার ঝুঁকি নিয়ে ইরান ও ইসরায়েল একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর কয়েকদিনের মধ্যেই আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন ইব্রাহিম রইসি। তবে সেই সফরে গাজা যুদ্ধের সঙ্গে কাশ্মির ইস্যুটি জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী শেহবাজ। তবে তার এই কুটনীতির চালটি কোন কাজে আসেনি। কারণ এ বিষয়ে একটি কথাও বলেননি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এর যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময়, শেহবাজ শরীফ গাজার পরিস্থিতির সাথে কাশ্মীরের পরিস্থিতি যুক্ত করে ইরানের অবস্থানকে সংযুক্ত করতে চেয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, কাশ্মীরের জন্য আওয়াজ তোলার জন্য আমি আপনাকে এবং ইরানের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। তবে রাইসি তাঁর বক্তব্যে কাশ্মিরের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।  তিনি নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইকারীদের জন্য বিশেষ করে ফিলিস্তিনে ইরানের সমর্থনের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কাশ্মীর বিরোধে সমর্থন আদায়ের জন্য বারবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। তবে এ দফায়  ইরানের রাষ্ট্রপতির নিরাবতা ইসলামাবাদের জন্য স্পষ্ট অপমান হিসাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছে ইরান এবং ভারতের অর্থপূর্ণ সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তেহরানে ভারতীয় দূতাবাসের দেওয়া একটি প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে: "ভারত এবং ইরানের পারস্পরিক সম্পর্কের সহস্রাব্দ-দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সমসাময়িক এবং সম্পর্ক এই ঐতিহাসিক ও সভ্যতাগত সম্পর্কের শক্তির উপর নির্ভর করে।

ইরান ও পাকিস্তান একে অপরের ভূমিতে কথিত সন্ত্রাসী আস্তানার বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর কয়েক মাস পর ইরানের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সফর আসে। এটি তাদের ভাঙা সম্পর্ক মেরামতের জন্য উভয় দেশের সক্রিয় প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করে। রাষ্ট্রপতি রাইসি হলেন প্রথম বিদেশী নেতা যিনি 8 ফেব্রুয়ারি দেশটির বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পাকিস্তান সফর করেন।

উপরে