আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৫:০৯

‘কোহিনুর’ কার? পাকিস্তানের না ভারতের?

অনলাইন ডেস্ক
‘কোহিনুর’ কার? পাকিস্তানের না ভারতের?

বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও মূল্যবান হিরকখণ্ড ‘কোহিনুরের’ স্বত্ত্বাধিকার পাকিস্তানের দাবি করে দেশটির হাই কোর্টে এক আইনজীবীর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন  আদালত।

ভারতের একদল আইনজীবী যুক্তরাজ্যের কাছে কোহিনুর ভারতের প্রাপ্য জানিয়ে তা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে শুরু করেছেন আইনি লড়াই। সে লড়আইয়ে শামিল হতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানি ব্যারিস্টার জাভেদ ইকবাল জাফরির।

জাফরির দাবি কোহিনুর পাকিস্তানের প্রাপ্য। কারণ হিসেবে তিনিও ইতিহাসকেই টেনে এনেছেন।

হাই কোর্টে করা তার আবেদনে জাফরি দাবি করেন, এই রত্নের সর্বশেষ অধিকারী পঞ্জাব-নৃপতি দিলীপ সিংহের কাছ থেকেই ব্রিটিশরাজ তা দখল করেছিল। আর পঞ্জাবের সেই অংশ এখন পাক-অধিকারে। তাই যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত অবিলম্বে কোহিনুর হিরকখণ্ড পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া।

আবেদনে তিনি বলেন, “কোহিনুর পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার।”

পাঞ্জাব কেশরী মহারাজ রঞ্জিৎ সিংহের পুত্র দিলীপ সিংহের অধিকার থেকেই শাহজাহানের সাধের কোহিনুর অবিভক্ত ভারত থেকে বিদায় নেয়।

অবশ্য তার এতদ চেষ্টার পরও শুনানি নিয়ে জাফরির ওই আবেদন নাকচ করেছে লাহোর হাইকোর্ট।

ভারতও বহুকাল ধরেই কোহিনুর ফেরত পাওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। কিন্তু ২০১০ সালের জুলাইয়ে ভারত সফরে এসে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সাফ জানিয়ে দেন, তারা কোহিনুর ফেরত দেবেন না।

ভারত, পাকিস্তান ছাড়া ইরান, আফগানিস্তানও কহিনুরের মালিকানা দাবি করে আসছে বহু দিন ধরে।

কোহ্-ই-নূর শব্দের অর্থ ‘আলোর পর্বত’। কোহিনূর সম্পর্কে সবচেয়ে পুরানো ঐতিহাসিক সূত্র পাওয়া যায় মুঘল সম্রাট বাবরের রেখা ‘বাবরনামাতে’। কোহিনূর ছিল ১৮৬.১০ ক্যারেট ওজনের এক আশ্চর্য হীরকখণ্ড। তবে ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে বেশ কয়েকবার কাটার পর বর্তমানে এটির ওজন আছে ১০৫.৬০ ক্যারেট।

১৮৫১ সালে কোহিনূরকে কেটে বসানো হয় একটি আর্মলেটে। তখন কোহিনূর হয়ে ওঠে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় বস্তু।

এরপর ১৮৫২ সালে কোহিনূরের উপর আবারো ছুরি চলে । তখন ১৮৬.১০ ক্যারেটের ৪০ শতাংশই কাটা পড়ে। আকার ও ওজন কমে আসে ১০৫.৬০ ক্যারেটে।  

কোহিনূরের মালিকানা একের পর এক বদল হয়েছে গত ৭০০ বছর ধরে। এর জন্ম থেকেই বিভিন্ন রাজাবাদশাহ্ আর সম্রাটদের হাত ঘুরে বর্তমানে স্থীর হয়েছে বৃটিশ রানী ভিক্টোরিয়ার মুকূটে। তবে রানী ভিক্টোরিয়ার হাতে গিয়ে কোহিনুর হাত বদল হয়নি, বরং বেহাত হয়েছে।

বৃটেনে কোহিনুরকে প্রথমে রাণী ভিক্টোরিয়া পরতেন তার হাতে। সেখান থেকে ১৮৫৩ সালে কোহিনুর স্থান করে নেয় তার শিরমূলে।

১৯১১ সালে রানী মেরির স্বর্ণমুকূট আলোকিত করে কোহিনূর। ১৯৩৭ সালে ষষ্ঠ জর্জের করোনেশনের দিন রানীমাতার মুকূটে স্থান পায় সর্বকালের সেরা হীরকখণ্ডটি।

 

কোহিনূরনামা
পূর্ব ওজনঃ ১৮৬.১০ ক্যারেট
বর্তমান ওজনঃ ১০৫.৬০ ক্যারেট
রং: সচ্ছ সাদা
জন্মস্থানঃ ভারত
বর্তমান মালিকানাঃ বৃটেন
মালিকানা দাবিদারঃ ভারত, পাকিস্থান, ইরান, আফগানিস্থান।

বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/এআর/একে

উপরে