বাবা ছাড়া প্রথম ঈদ

বাবা আজ তুমি এত দূরে চলে গেছো যে সেখান থেকে আর কোন দিন ফোন দিয়ে আমাকে ঈদের নামাজে যেতে বলতে পারবে না তাই আজ আমি নামাজেও যাইনি।জানিনা তুমি ওপাড়ে কেমন আছে? কিন্তু আমি খুব কষ্টে আছি।তোমাকে হারানোর পর আমি এভাবে সন্তান হারা হব কখনো কল্পনা করিনি বাবা।
আজ এই খুসির দিনে ঘরের এক কোণে বসে কেবল ভাবছি আর ভাবছি যদি আর একটা বারের জন্য তোমাকে পেতাম তাহলে আমার জীবনে আর কিছুই চাইবার থাকতো না।পৃথিবীতে এমন কেউ নেই আজকের দিনে আনন্দ করছে না? সেই মহা খুশি থেকে একমাত্র আমি অভাঁগা বাবা হারা এতিম সন্তান হিসেবে এবারের ঈদটা উদযাপন করতে হবে। যেন এই ঈদটা আমার কাছে একটা যন্ত্রনাময় কিছুতেই তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারছি না।
গতকাল সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে যখন ঈদের চাঁদ দেখতে পেলাম তখন থেকেই বুকে একটা তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভব করছি এই ব্যাথা তোমাকে ছাড়া ঈদ করতে হবে সেই ব্যাথা বাবা। আগেও আমি কখনো ঈদে আয়োজন করে শপিং করতে যেতাম না কিন্তু তোমার বাড়াবারিতে একটা শার্ট- প্যান্ট নিতেই হত প্রতি ঈদে। এবার তুমি নাই বলে একটা একটা করে ৩০ টা রোজা শেষ হয়ে গেল কিন্তু সত্যি বাবা গতকাল পর্য়ন্ত একটা বারো কিছু কেনার কথা মনেই আসে নাই। কিন্তু তুমি হয়ত ওপার থেকে চাইছো আমি যেন ঈদে নতুন জামা পড়ি তাই গতকাল রাত ১১ টার পরে আমাকে ডেকে নিয়ে নতুন জামা কিনে দেয় সম্পাদক (সাজ্জাদুল ইসলাম নয়ন) আমি ভাবতেও পারি নাই এমনটা হবে। তবে তুমি যে আকাশ থেকে আমাকে দেখছো সেটা আমি জানি বাবা।
আমি জানি বাবা আমার মত কত সন্তান বাবা হারা মা হারা ঈদ করছে? তবুও নিজেকে বোঝাতে পারছি না, বৃষ্টির মতো দু'চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরে পরছে। তার পরেও দুই হাত দিয়ে চোখের জল মুছে কম্পিউটারের সামনে বসেছি, ঈদের খবরাখবর মানুষকে জানানতে। কিন্তু মহামারি করোনায় গেল বছরের দুই ঈদের মত এবারো ছিলো না অনাবিল আনন্দের আবহ আর খুশির জোয়ার। এবারের ঈদেও নেই চিরায়ত সেই আবহ। অদৃশ্য এক ভাইরাসে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এক কথায় বলতে গেলে, এবারও ঈদ উৎসব আনন্দ-খুশির ডালা সাজিয়ে নয়, এসেছে শঙ্কা-অনিশ্চয়তার বার্তা নিয়ে। জানিনা কত মানুষ হাসপাতালের মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে, আল্লাহ তাদের যেন তারাতারি সুস্থ করে বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে দেয়